শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:আগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। এর মধ্য দিয়ে দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নিবেন পাকিস্তানিরা। কিন্তু দুইদিন আগে সেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ২০১৩ সালে জাতিসংঘের ক্যারেপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী পাকিস্তানি সাংবাদিক বেনজির শাহ। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি কত জনের এই ভোটে উৎসাহ আছে? কত জনই বা ২৫ তারিখ নির্বাচন বুথের সামনে লাইন দেবেন?
তার মতে, এই আশঙ্কার কারণ দুটি। এবার ভোটের আগে লাগাতার সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার ঘটনা বেশ কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু ভোটের আগের দু’সপ্তাহে চেহারাটা পাল্টে গেল। ১০ জুলাই পেশোয়ারে এক জঙ্গি হামলায় আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি-র নেতা হারুন বিলোয়ারসহ ২২ জন নিহত হন। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষ দল এই এএনপি। আরও ভয়াবহ হামলা ঘটে ১৩ জুলাই। বেলুচিস্তানের মাস্তুংয়ে বালুচ আওয়ামী পার্টির এক জনসভায় জঙ্গি হামলায় প্রায় দেড়শ’ জন নিহত হন। জখম হন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী দলের নেতা সিরাজ রায়সানিও। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, আতঙ্ক বাড়ছে।
বেনজির আরও বলেন, তবে শুধু জঙ্গি হামলার আতঙ্ক নয়। দেশের রাজনৈতিক ডামাডোল দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে— ‘‘ভোট দিতে যাব কেন?’’ এই স্বপ্নভঙ্গের আভাস পাওয়া গেছে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলেও। সাধারণত ভোটের আগে রাজনৈতিক সমাবেশে যে ধরনের ভিড় হয়, এবার তার থেকে ভিড় অনেকটাই কম। গতবার বিপুল সংখ্যক কমবয়সি ছেলেমেয়ে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু এবার অনেকের সঙ্গেই কথা বলে দেখছি তাঁদের মনের ভাবটা অনেকটা এ রকম— ভোটের ফল যদি আগে থেকেই ঠিক হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলে আর ভোট দিয়ে লাভ কী!
পাকিস্তানি এই সাংবাদিকের দাবি, ভোট বা প্রাক-ভোটে গোলমালের অভিযোগ পাকিস্তানে নতুন নয়। কিন্তু এবার যেভাবে ছোট-বড় রাজনৈতিক দল এবং সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তাতে মানুষের মনে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্বন্ধে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। সামরিক শাসন দেখেছে আমাদের দেশ। দেখেছে ‘সেন্সরশিপ’ও। কিন্তু এখন যেভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তা অভূতপূর্ব! সাধারণত, ভোটের ফল কী হবে, তা বলে দেয় দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ— পাঞ্জাব। কিন্তু এবার এতটাই টালমাটাল অবস্থা যে কোনও ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীই করা যাচ্ছে না।
যেমন সত্যিই বোঝা যাচ্ছে না, পিটিআই নেতা ইমরান খান এবার মসনদে বসতে চলেছেন কি না। সেই ১৯৯৭ সালে যখন রাজনীতিতে পা রাখেন ইমরান, তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন দুর্নীতিগ্রস্তদের দলে ঢুকতে দেবেন না। তাঁর একটা ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিও মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবার তাঁর তালিকায় আছেন বেশ কিছু কট্টরপন্থী ও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থী। ফলে যে যুবসমাজকে আগে পাশে পেয়েছিলেন ইমরান তারা এবার তাঁর থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছে।
তবে একটাই আশার কথা। একটি সমীক্ষায় দেখছিলাম এবার প্রার্থীদের একটা বিরাট অংশ বয়সে বেশ প্রবীণ, সত্তরের উপরে। পরের ভোটে এঁদের জায়গায় হয়তো এক ঝাঁক তরুণ প্রার্থী আসবেন, নতুন দিশা দেখাবেন।
সুত্র বাংলাদেশ প্রিতিদিন
Leave a Reply